Description
একটি অপাপবিদ্ধ কিশোর কলেজ-হস্টেলের প্রথম দিনেই শিকার হয়েছিল অমানুষিক র্যাগিংয়ের। তার সারল্য আর সদাবিষ্মিত মন যেন নহবতখানার সুবিশাল ঝাড়বাতির মতো পড়ে গিয়ে ঝনঝন শব্দে ভেঙে পড়ছিল। তবে তার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ করতে গিয়েই নিখিলেশ আবিষ্কার করেছিল নিজের দ্বিতীয় সত্তাকে। পা রেখেছিল ছাত্র-রাজনীতিতে উঠোনে। কিন্তু আজকের ছাত্র-রাজনীতি যে আসলে পার্টির ক্যাডার তৈরির কারখানা, এটা বুঝেই বিতৃষ্ণ নিখিলেশ বেরিয়ে এসেছিল সেই শূন্যগর্ভ রাজনীতি থেকে। তবে সেটা সাময়িক। বুকের আগুন যখন একবার মশাল হয়ে যায় তখন সে আর কখনোই নেভে না। ততদিনে তার দ্বিতীয় সত্তার চেহারা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়েছে। দৃষ্টি হয়েছে তীক্ষ্ণ। বক্তব্য হয়েছে ধারালো।
সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এল এমন একটা সময়ে, যখন দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ছিনিয়ে নিতে চাইছে নাগরিক বাকস্বাধীনতা। দেশপ্রেম মাপা হচ্ছে দাঁড়িপাল্লায়। কে কি দিয়ে ভাত খাবে কিংবা ঠোঁটে কি রঙ দেবে, সেটা ঠিক করে দিতে চাইছে শাসক। ছাত্রসমাজের উপর নেমে এল একের পর এক আঘাত। ঢাক পিটিয়ে গলায় বকলসের দাগ দেখানোর উৎসবে সামিল হওয়াটাই যখন দস্তুর, তখন দেশ ও সমাজের এই দুঃসময়ে সাম্য, স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র রক্ষার নিখিলেশের নেতৃত্বে গর্জে ওঠে তামাম ছাত্রসমাজ। খোলা তরবারির মতো ঝলসে ওঠে নিখিলেশ। পাশে পেয়ে যায় নন্দিতাকে। যার নিঃশর্ত ভালোবাসা দুর্ভেদ্য বর্মের মতো আটকে দেয় আততায়ীর প্রাণঘাতী গুলি। ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তো কি হয়েছে? তবু নিখিলেশ তো ভুলে যেতে পারে না সেইসব তাজা, তরুণ প্রাণগুলোর কথা, যাঁরা একদিন নিজেদের জ্যান্ত কলজেতে হাত ডুবিয়ে সাদা পতাকায় রঙ দিয়েছিল। সেই অসম্পূর্ণ অথচ অসম লড়াই শুরু করতেই জ্বলে উঠল একের পর এক মশাল। উজ্জ্বল আকাশে জন্ম নিল নতুন এক সূর্য।
শুরু হল “হোক কলরব।”
Reviews
There are no reviews yet.